নিউক্লিয়াস (Nucleus Of Cell)

এপ্রিল ০৫, ২০২১

নিউক্লিয়াস (Nucleus Of Cell)


কোষের একদম মেইন জিনিস হচ্ছে তার নিউক্লিয়াস। নিউক্লিয়াস কোষের সব ধরনের কাজ করে। নিউক্লিয়াস ছাড়া কোনো কোষ কল্পনাও করা যায় না। নিউক্লিয়াস শব্দটি দ্বারা কেন্দ্র বোঝানো হয়। তবে নিউক্লিয়াস ছাড়াও কোষ তৈরি হতে পারে এবং সেটা বেচেও থাকতে পারে। কিছু নিউক্লিয়াস বিহীন কোষের উদাহরণ হচ্ছে- লোহিত রক্ত কণিকা (Red Blood Cell- RBC), অনুচক্রিকা (Platelets বা thrombocytes) ইত্যাদি।

নিউক্লিয়াসের একটা বড় গুন হচ্ছে সে ভাগ হতে পারে। নিউক্লিয়াসের ভাগের ফলে আমাদের কোষও ভাগ হয়ে যায় এবং নতুন কোষ তৈরি করে। এই ঘটনাটা হচ্ছে কোষ বিভাজন বা Cell Division. তাই যেসব কোষে নিউক্লিয়াস নেই সেসব কোষ কখনোই ভাগ হতে পারে না।

একটা নিউক্লিয়াসের বিভিন্ন অংশ রয়েছে।

  • নিউক্লিয়ার মেমব্রেন (Nuclear Envelope)

পুরো নিউক্লিয়াসের চারদিক একটা কভার বা আবরণী দিয়ে আটকানো থাকে। এই আবরণীর নাম নিউক্লিয়ার মেমব্রেন। মেমব্রেন কথাটার অর্থই হচ্ছে পর্দা। নিউক্লিয়ার মেমব্রেন আমাদের কোষঝিল্লির মত দুটো Layer নিয়ে তৈরি যাকে ফসফোলিপিড layer বলা হয়। নিউক্লিয়ার মেমব্রেনের ফাঁকেফাঁকে কিছু ছিদ্র দেখা যায়, এদেরকে নিউক্লিয়ার রন্ধ্র বা Nuclear Pore বলে। এসব ছিদ্র দিয়ে নিউক্লিয়াসের ভেতরের পদার্থগুলো কোষের সাইটোপ্লাজমে বের হয়ে আসে, আবার সাইটোপ্লাজম থেকে কিছু পদার্থ নিউক্লিয়াসের ভেতরে ঢোকে।

  • নিউক্লিওপ্লাজম (Nucleoplasm)

সাইটোপ্লাজম শব্দটাতে প্লাজম কথাটা যেমন যুক্ত, ঠিক তেমনি নিউক্লিওপ্লাজমেও প্লাজম কথাটা যুক্ত। প্লাজম শব্দটার মানে হচ্ছে প্রাণরস, যেটা জেলীর মত এক ধরনের পদার্থ। নিউক্লিয়াসের পুরো শরীর জুড়ে জেলীর মত এক ধরনের পদার্থ থাকে যাদেরকে নিউক্লিওপ্লাজম বলে। নিউক্লিয়াসের ভেতরে যেসব পদার্থ থাকে সেগুলোকে আটকে ধরে রাখাই হচ্ছে নিউক্লিওপ্লাজমের কাজ।

  • নিউক্লিওলাস (Nucleolus)

নিউক্লিয়াসের ভেতর খুব ঘন, গোল একটা বস্তুকে দেখা যায়। এর নাম নিউক্লিওলাস। এটি রাইবোসোমাল RNA (rRNA) তৈরি করে। rRNA দিয়ে কোষের সব ধরনের রাইবোসোম তৈরি হয়।

  • ক্রোমাটিন (Chromatin)

নিউক্লিয়াসকে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখলে এর ভেতর প্যাঁচানো সুতার মত কিছু একটা দেখা যাবে। এর নাম ক্রোমাটিন। এটি নিউক্লিওপ্লাজমের মধ্যে আটকে থাকে। ক্রোমাটিন নামক এই সুতা তৈরি হয় অনেকগুলো DNA এবং হিস্টোন প্রোটিন পেঁচিয়ে। তাই কোষের সকল DNA থাকে এই ক্রোমাটিন সুতাতে। DNA এক প্রজন্মের জীবদেহ থেকে আরেক প্রজন্মের জীবদেহে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পাঠিয়ে দেয়।