একটা কোষে যত ধরনের জীবিত বস্তু আছে তার মধ্যে কোষ প্রাচীরের কোনো জীবন নেই। এটি মৃত বস্তু। Cell wall সব ধরনের কোষে পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র উদ্ভিদকোষ বা plant cell এ দেখা যায় কোষপ্রাচীর। তবে আদিকোষী (বা Prokaryotic) ব্যাকটেরিয়ার মধ্যেও কোষ প্রাচীর দেখা যায়।
অনেকে কোষপ্রাচীর (cell wall) এবং কোষঝিল্লিকে (cell membrane) মিলিয়ে ফেলো। তাই এই বিষয়টা একটু ক্লিয়ার হওয়া দরকার। কোষপ্রাচীর থাকে কোষঝিল্লির বাইরে। A এবং B যদি দুটো কোষ হয় তবে কোষ দুটোকে ঘিরে যে পর্দা থাকে সেটা কোষঝিল্লি এবং কোষের একদম বাইরে বাউন্ডারির মত যেটা থাকে সেটাকে কোষ প্রাচীর বলা হয়। অর্থাৎ প্রাণিকোষের সবচেয়ে বাইরের পার্ট হচ্ছে কোষঝিল্লি, উদ্ভিদকোষের সবচেয়ে বাইরের পার্ট হচ্ছে কোষপ্রাচীর।
প্রাণিকোষ গুলো একে অপরের সাথে প্রায় লেগে লেগে থাকে। তারা মাইক্রোফিলামেন্ট নামক সুতার মত পদার্থ দ্বারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে। কিন্তু উদ্ভিদকোষে cell wall থাকে বলে কোষগুলো একে অপরের সাথে কাছাকাছি লেগে থাকে না।
Cell wall গঠিত হয় বিভিন্ন রাসায়নিক বস্তু দ্বারা যাদের মধ্যে শর্করা বা carbohydrate অন্যতম। বিশেষ করে পলিস্যাকারাইড কার্বোহাইড্রেট (যাদের C সংখ্যা বেশি) দিয়েই cell wall তৈরি হয়।
একটা cell wall-এ মোট তিনটা অংশ থাকে-
i. মধ্য ল্যামেলা (Midde Lamella)
ii. প্রাথমিক কোষ প্রাচীর (Primary Cell Wall)
iii. মাধ্যমিক কোষ প্রাচীর (Secondary Cell Wall)
দুটো কোষ যদি পাশাপাশি থাকে তবে কোষ দুটো থেকে কিছু প্রোটিন বের হয়। এই প্রোটিন কোষ দুটোর মধ্যে একটা পর্দা বা layer তৈরি করে। এই layer কে মধ্য ল্যামেলা বলা হয়। মধ্য ল্যামেলাতে সেলুলোজ থাকে। দুটো মধ্য ল্যামেলা পরস্পরের সাথে interlink (বা যুক্ত) হয় হেমিসেলুলোজ দিয়ে।
মধ্য ল্যামেলার বাইরের দিকে আরো একটা পর্দা বা layer থাকে। এই layer কে প্রাথমিক কোষ প্রাচীর বা primary cell wall বলা হয়। এই layer তৈরি হয় এক ধরনের শর্করা বা carbohydrate দিয়ে যার নাম সেলুলোজ। Primary cell wall এর সাথে middle lamela যুক্ত থাকে পেকটিনের মাধ্যমে।
আবার কোনো কোষের primary cell wall এর চারপাশে আরেকটা layer তৈরি হয়। একে মাধ্যমিক কোষ প্রাচীর বা secondary cell wall বলা হয়। এটি তৈরি হয় ভিন্ন ধরনের শর্করা দিয়ে যাদের নাম পেকটিন, লিগনিন ইত্যাদি হয়ে থাকে।
উদ্ভিদ চলাচল করতে পারে না। ফলে তার ওপর পরিবেশের বিভিন্ন ধরনের ইফেক্ট পড়ে। Cell wall অনেক শক্ত একটা আবরণ। এর কাজ হচ্ছে উদ্ভিদের কোষকে বাইরের আঘাত থেকে রক্ষা করা। এছাড়া কোষকে একটা নির্দিষ্ট shape দেয়াটাও হচ্ছে কোষ প্রাচীরের কাজ। আমাদের শরীরে কোষপ্রাচীর না থাকার ফলে আমাদের কোষগুলো খুব দ্রুত একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। এক কোষ থেকে আরেক কোষে বিভিন্ন জিনিস পাঠানোর জন্য আমাদের শরীর blood vessel বা রক্তনালী ব্যবহার করে। কিন্তু উদ্ভিদের শরীরে এই সুযোগ নাই। একটা উদ্ভিদ কোষ আরেকটা উদ্ভিদ কোষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে Plasmodesmata নামক এক ধরনের পথ দিয়ে।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন