রাসায়নিক বিক্রিয়া ও রাসায়নিক সমীকরণ

ডিসেম্বর ২৮, ২০২০

 

রাসায়নিক বিক্রিয়া ও রাসায়নিক সমীকরণ


রাসায়নিক বিক্রিয়া [Chemical reaction]:- যে প্রক্রিয়ায় একটি পদার্থ বিশ্লিষ্ট হয়ে কিংবা একাধিক পদার্থ পরস্পরের সংস্পর্শে এসে রাসায়নিক সংযোগের মাধ্যমে এক বা একাধিক ভিন্নধর্মী নতুন পদার্থ উত্পন্ন করে, সেই প্রক্রিয়াকে রাসায়নিক বিক্রিয়া বলে ।

যে পদার্থ বা পদার্থগুলি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে, তাদের বিকারক বা বিক্রিয়ক পদার্থ [Reactants] বলে ।

রাসায়নিক বিক্রিয়ার ফলে নতুন ধর্মবিশিষ্ট যেসব পদার্থ উত্পন্ন হয়, তাদের বিক্রিয়াজাত পদার্থ [Products] বলে ।

 

রাসায়নিক সমীকরণ [Chemical equation]:- বিক্রিয়ক এবং বিক্রিয়াজাত পদার্থের পরামাণুগুলির মধ্যে সমতা বজায় রেখে চিহ্ন ও সংকেতের সাহায্যে কোনো রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে প্রকাশ করার পদ্ধতিকে রাসায়নিক সমীকরণ বলে ।

 

উদাহরণ : হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের রাসায়নিক বিক্রিয়ায় জল উত্পন্ন হয় । হাইড্রোজেন + অক্সিজেন = জল

এই বিক্রিয়াটিকে চিহ্ন ও সংকেতের সাহায্যে সংক্ষেপে প্রকাশ করা হয় । 2H2 + O2 = 2H2O এটাই বিক্রিয়াটির রাসায়নিক সমীকরণ । এখানে H2 ও O2 বিক্রিয়ক এবং H2O হল বিক্রিয়াজাত পদার্থ ।

 

রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংখেপে উপস্থাপন করার জন্য রাসায়নিক সমীকরণ ব্যাবহার করা হয়। অর্থাৎ সমীকরণ হলো,রাসায়নিক সটহ্যান্ড (Chemical Shorthand) ও কোন রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে রসায়নের ভাষাই প্রকাশ। রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিওমাবলি-

  • রাসায়নিক বিক্রিয়া যে সকল পদার্থ নিয়ে শুরু করা হয় তাদেরকে বিক্রিয়ক (Reactant) এবং যে সকল পদার্থ উৎপন্ন হয় তাদেরকে উৎপাদন (Product) বলে। রাসায়নিক সমীকরণে বিক্রিয়কসমূহকে বামপাশে এবং উৎপাদনসমূহকে ডানপাশে লিখে মাঝখানে সমান (=) অথবা আরো (→) চিহ্ন দেয়া হয়।
  • বিক্রিয়ায় একাধিক বিক্রিয়ক এবং একাধিক উৎপাদন থাকলে তাদেরকে যোগ (+) চিহ্ন দিয়ে লেখা হয়।
  • সমিকরনের বামপাশের বিভিন্ন মৌলের পরমাণুর সংখ্যা এবং ডানপাশের একই মৌলের পরমাণুর সংখ্যা সমান করা হয়। বিক্রিয়ক এবং উৎপাদন ভিন্ন যৌগ হলেও তা অভিন্ন মৌলের পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয়। এতে ভরের সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করে।
  • বিক্রিয়ক এবং উৎপাদনের ভৌত অবস্থা যৌগের ডানপাশে নিচে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে লেখা হয়। যৌগের ভৌত অবস্থা কঠিন (Solid) হলে (s), তরল (Liquid) হলে (l) এবং গ্যাসীয় (Gaseous) হলে (g) লেখা হয়। বিক্রিয়ক এবং উৎপাদন হিসেবে কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণ (Aqueous solution) থাকলে (aq) লেখা হয়।

কার্বন বা কয়লাকে বায়ুর অক্সিজেনের উপস্তিতিতে দহন করলে কার্বন (IV) অক্সাইড বা কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয়। এখানে কার্বন ও অক্সিজেন বিক্রিয়ক এবং কার্বন (IV) অক্সাইড উৎপাদন। বিক্রিয়ক কার্বন কঠিন, অক্সিজেন গ্যাসীয় এবং উৎপাদন কার্বন (IV) অক্সাইড গ্যাসীয় পদার্থ।